
ভূমিকা ও পরিচয়
সাতসকালে বারান্দায় এক কাপ চা নিয়ে দাঁড়ালে দারুণ এক শহরের দেখা মেলে। একটু সময় বাড়লেই দূর থেকে বাড়তে থাকে ট্রাফিকের শব্দ আর গাড়ির হর্ন। কখনো কখনো এই শব্দে আমাদের মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। একই রকম প্রতিক্রিয়া দেখা যায় পাখিদের মধ্যেও। গবেষকরা বলছেন, শহরায়ণের ফলে পাখিরা ক্রমশ বিরূপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে। বিশেষ করে, রাস্তাঘাটের গাড়ির অতিরিক্ত শব্দ পাখিদের জন্য চাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গাড়ির শব্দ পাখির উপর প্রভাব
গবেষণায় দেখা গেছে, গ্যালাপাগোস দ্বীপের কিছু পাখির উপর গাড়ির শব্দ নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। পাখিরা শব্দের কারণে উদ্বেগ অনুভব করে, যা তাদের আচরণে পরিবর্তন আনে। কিছু পাখিকে আগ্রাসী আচরণ করতে দেখা যায়, যা প্রায়শই তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে লড়াইয়ের কারণ হয়।
গবেষকরা এমন ৩৮টি স্থানে পরীক্ষা চালান, যেখানে এসব পাখির বাস। তারা একটি স্পিকারের মাধ্যমে রেকর্ড করা গাড়ির শব্দ অনবরত বাজাতে থাকেন। এই স্থানগুলোর কিছু নিকটতম রাস্তার সংলগ্ন ছিল, আবার কিছু রাস্তা থেকে অন্তত ১০০ মিটার দূরে অবস্থিত ছিল। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব পাখি সরাসরি রাস্তার ধারে ছিল, তারা বেশি মাত্রায় উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং আগ্রাসী আচরণ প্রদর্শন করে। অন্যদিকে, যেসব পাখি তুলনামূলক দূরে ছিল, তারা অপেক্ষাকৃত কম প্রতিক্রিয়া দেখায়।
শব্দদূষণ ও পাখির আচরণ
- অবস্থান পরিবর্তন: কিছু পাখি উচ্চ শব্দ এড়াতে নতুন স্থানে বসবাস শুরু করে।
- স্বর পরিবর্তন: পাখিরা তাদের ডাকের স্বর উঁচু করে যাতে শব্দ দূষণের মধ্যে যোগাযোগ বজায় থাকে।
- চঞ্চলতা বৃদ্ধি: অতিরিক্ত শব্দের কারণে পাখিদের মধ্যে উদ্বেগ ও চঞ্চলতা দেখা যায়।
পরিণতি
গাড়ির শব্দ পাখিদের জীবনযাত্রার ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলে।
কারণ | পরিণাম |
---|---|
উচ্চ শব্দ | পাখিদের মানসিক চাপ বৃদ্ধি |
নিরাপদ পরিবেশের অভাব | বাসস্থান পরিবর্তন |
খাদ্য সন্ধানে সমস্যা | পুষ্টিহীনতা |
সমাধান
- শব্দদূষণ কমানো: শহরে গাড়ির শব্দ কমাতে পর্যাপ্ত সবুজ এলাকা তৈরি করা দরকার।
- সচেতনতা বৃদ্ধি: মানুষকে সচেতন করতে বিশেষ প্রচারণা চালানো উচিত।
- প্রযুক্তির ব্যবহার: ধ্বনিনিয়ন্ত্রিত যানবাহন ব্যবহার করা যেতে পারে।
সারসংক্ষেপ
গাড়ির শব্দের প্রভাব থেকে পাখিদের রক্ষা করা জরুরি। শব্দদূষণের মাত্রা কমানোর পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব শহর গড়ে তোলা দরকার।
উপসংহার
শব্দদূষণ কমিয়ে পাখিদের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। পরিবেশ সংরক্ষণে আমাদের আরও উদ্যোগী হতে হবে।